ক্যামেরা হাতে দেশের নানা প্রান্তে ছুটে বেড়ান ইমরুল কায়েস ও উম্মে খাদিজা। ঘুরে ঘুরে পাখি, বন্য প্রাণী ও প্রকৃতির ছবি তোলেন রাজশাহীর এই তরুণ দম্পতি। কয়েক দিন আগে তাঁদের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে দেশে বিলুপ্ত ঘোষিত মিঠাপানির কুমিরের ছবি। এই দম্পতিকে নিয়ে লিখেছেন আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ ও সজীব মিয়া
পদ্মার চরে সারা বছরই থাকে পাখিদের আনাগোনা। উম্মে খাদিজা আর ইমরুল কায়েসেরও প্রিয় জায়গা এই চরাঞ্চল। অন্য অনেক আলোকচিত্রীর চেয়ে তাঁদের সুবিধাও আছে, বাসাটা রাজশাহী শহরে হওয়ায় মন চাইলেই ক্যামেরা কাঁধে চলে যান। গত বছর ১ এপ্রিলেও তা-ই করেছিলেন। বেশ কিছু পাখির ছবিও তুললেন দুজন। একটি পাখির ছবি তোলার পর নিশ্চিত হতে পারছিলেন না, কী পাখি। বাসায় ফিরেই দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের কাছে ছবি পাঠালেন। তাঁদের কাছ থেকে জানতে পারলেন, এই পাখি বাংলাদেশে অত্যন্ত বিরল। নাম গ্রে ফ্যালারোপ বা ধূসর ফ্যালারোপ। রেড ফ্যালারোপ বা লাল ফ্যালারোপও বলে। তাঁদের আগে দেশে একবার পাখিটি দেখা গেছে। তারপর বিভিন্ন সংবাদপত্রে ছাপা হলো বিরল সেই পাখির ছবি।
প্রায় এক দশকে ৪২৬ প্রজাতির পাখির ছবি তুলেছেন ইমরুল কায়েস; উম্মে খাদিজার তোলা পাখির ছবির সংখ্যাও চার শতাধিক। পাখি ছাড়া ২২ প্রজাপতির ব্যাঙ, ৩০ প্রজাতির সাপকে ক্যামেরাবন্দী করেছেন তাঁরা। পাখির পর সবচেয়ে বেশি তুলেছেন প্রজাপতির ছবি। প্রজাপতিবিজ্ঞানী অধ্যাপক মনোয়ার হোসেনের একটি গবেষণাপত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৪২০ প্রজাতির বেশি প্রজাতি রয়েছে। এর মধ্যে ইমরুল কায়েস ও উম্মে খাদিজা তুলেছেন প্রায় ৩০০ প্রজাতির ছবি। বাংলাদেশে এর আগে তালিকাভুক্ত হয়নি, এমন চার প্রজাতির ছবিও তুলেছেন এই দম্পতি। এগুলো হলো ওয়েভি ম্যাপলেট (Chersonesia intermedia), ব্রাইট বাবল ব্লু (Azanus ubaldus), অটাম লিফ (Doleschallia bisaltide) ও আনব্রোকেন সার্জেন্ট (Athyma pravara)।
ইমরুল কায়েস বলেন, ‘দেশের প্রজাপতি বিশেষজ্ঞরা আমাদের এই আবিষ্কারগুলোর জন্য অভিবাদন জানিয়েছেন।’